আপনার সেরা লেখাটা শৈশব পত্রিকায় প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দিন।

শৈশব

রুদ্র সাকিবের তিনটি কবিতা


তুমি 


তুমি সম্বন্ধে আমার স্ত্রী, সৌহার্দ্যে ভ্রাতা

যত্নে আমার ভগিনী, স্নেহে আমার মাতা।

আপ্যায়নে কুটুম্বিনী, ভক্তিতে কণ্যা

হ্নদয়ের ধর্ম আমার, মনের ইচ্ছে-বাসনা।

প্রমোদে বন্ধু, পরামর্শে শিক্ষক হায়

পরিচর্যায় দাসী তুমি, সংসারের সহায়।

গৃহের লক্ষ্মী তুমি, কন্ঠের অলঙ্কার 

সংগৃহীত

নয়নের তারা তুমি, সুখের আধার।

জীবনের সর্ব্বস্ব তুমি, দেহের জীবন

প্রমোদে হর্ষ তুমি, নিশ্বাসের পবন।

বিষাদে শান্তি তুমি, চিন্তায় বুদ্ধি

কার্যে উৎসাহ, দূর্বলতায় শক্তি।

দর্শনে আলোক তুমি, শ্রবণের সঙ্গীত

স্পর্শে জগত তুমি, স্মৃতির অতীত।

বর্তমানের সুখ আমার, ভবিষ্যতের আশা

পরলোকের পূণ্য তুমি, আমার ভালোবাসা!



অনুভব

জন্মেছি আমি স্বাধীন বাংলায়

তবু যেন আজ পরাধীন সেথায়।

যেন এদেশে আছে আজো বহু শকুন

আজো যেন এদেশে রাজাকার আলখাল্লার গুনগুন।

যেন ওরা আজো দিতে চায় হানা

ভালোবাসার মর্যাদা দেওয়া যেন নেই ওদের জানা।

সংগৃহীত


যেন আজো ভরে দিতে চায় এদেশ রক্তাক্ত প্রান্তরে

ওরা যেন আজো অগ্নি জ্বালায় সোনার বাংলার কত ঘরে।

মৃত্যুর কারবার যেন এদেশে আজো ওদের মতো স্বভাব

মনুষ্যত্ব, বিবেগবোধের যেন আজো বড়ই অভাব।

অমানবিক মনের মানুষ যেন আজো অহরহ

স্বাধীন বাংলায় যেন আজো বিদ্যের অভাব বড়।

আজো এদেশে বিকৃতবুদ্ধি-দূর্নীতির বর্তমান

যার যার ন্যায় যোগ্য -নেই প্রাপ্য সম্মান।

হীনমন্যতা আর যত অন্যায়-অপরাধ যেন নিত্য সাজ

এদেশ কবলিত হয়ে আছে আজো- নেই যেন লাজ।

প্রকৃত স্বাধীনতা আর সোনার বাংলার অভাব করি অনুভব

এদেশে আজ যেন নেই আগের সেই কলরব।


হে মহাজীবন

সংগৃহীত

কবিতা লিখে কী হবে আর?

যখন এই মহাজীবনের হয়েছে অত্যয়

যখন বারবার মনুষ্যত্বের হয় পরাজয়,

যখন দুর্বিষহ এই জীবন

প্রেমনলে হই ছারখার

তখন কবিতা লিখে কী হবে আর?

সুখের দ্বার উন্মোচিত হবে কি আমার?

যখন পথের ধারে শায়িত থাকে তাজা শিশু প্রাণ

কবিতায় যতই গেয়ে যাই গান,

মুক্ত হয় কি তারা? পায় কি আলোর খোঁজ?

দেখেছে কি এই বিচিত্র জীবন, খেতে পায় কি রোজ?

যখন ঐ পথের ধারে শুনি অনাহারে থাকা-

বৃদ্ধ নর-নারী অার্তনাদ

যখন নিয়তির তুচ্ছতায় বারবার করি চিৎকার,

যখন স্বার্থপর এই শহরে স্বার্থপরের'ই হয় জয়

মনুষ্যত্ব আর ভালোবাসার হয় পরাজয়,

তখন কবিতা লিখে কী হবে আর?

যখন জীবনযুদ্ধের রণক্ষেত্রে হামাগুড়ি দিয়ে

এগিয়ে যাই একটু সম্মুখে

ঠিক তখনি পিছু থেকে টেনে ধরে হিংসুকেরা

আঘাত হানে বুকে--

যখন বিচিত্র এই সংসারে দীনতা করে মহান

যখন হাসি-খুশি হয়ে যায় ম্লান,

তখন কবিতা লিখে কী হবে আর?

কবিতায় শব্দ হারিয়ে ফেলি

যখন দেখি এই মহাজীবনের হয়েছে অত্যয়

কবিতায় তবু লিখে যাই তার'ই জয়-পরিচয়।


রুদ্র সাকিব

শিক্ষার্থী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ,শরীয়তপুর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ